অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারে সাবধান!
ফাইল ফটো
ঢাকা, ২৮ অক্টোবর: বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ আবিষ্কার মুঠোফোন। বিশ্বের যে প্রান্তেই থাকুন মুহুর্তেই যোগাযোগ করতে পারছেন। মুঠোফোনের গুণের কথা বলে শেষ করা যাবে না।
কিন্তু, এই মুঠোফোনের গুণের পাশাপাশি অসুবিধাও কম নয়। অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোন ব্যবহার করলে স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ে। অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহারের ক্ষতি নিয়ে গবেষণাও হচ্ছে। হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে এসব ক্ষতিকর প্রভাবের কথা।
যদি হারিয়ে যায়: মুঠোফোন সব সময় ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে সবসময় সতর্ক থাকতে হয়। মোবাইল হারানো ভয় থেকে মনের মধ্যে জন্ম নেয় এক সমস্যা। গবেষকেরা মুঠোফোন ও সঙ্গে যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত অসুখের নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া, যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল-ফোন ফোবিয়া’।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ৫৩ শতাংশ এবং ২৯ শতাংশ ভারতীয় তরুণরা এ রোগের শিকার। ৫ বছর আগেও যে রোগের অস্তিত্ব কল্পিত ছিল না, আধুনিকতার সে রোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে চিন্তিত মনোবিজ্ঞানী-মহল। অতিরিক্ত মুঠোফোন নির্ভরতা কমিয়ে ফেলতে পরামর্শ দেন গবেষকেরা।
হারিয়ে যেতে পারে: মুঠোফোন সব সময় ঠিক জায়গায় আছে কিনা তা নিয়ে মন সব সময় সতর্ক থাকে। মোবাইল হারানো ভয় থেকে মনের মধ্যে জন্ম নেয় এক সমস্যা। গবেষকেরা মুঠোফোন ও সঙ্গে যোগাযোগ হারানোর এই ভয়জনিত অসুখের নাম দিয়েছেন ‘নোমোফোবিয়া,যার পুরো নাম ‘নো মোবাইল-ফোন ফোবিয়া’। বর্তমানে যুক্তরাজ্যের ৫৩ শতাংশ এবং ২৯ শতাংশ ভারতীয় তরুণরা এ রোগের শিকার। ৫ বছর আগেও যে রোগের অস্তিত্ব কল্পিত ছিল না, আধুনিকতার সে রোগ নিয়ে দেশে-বিদেশে চিন্তিত মনোবিজ্ঞানী-মহল। অতিরিক্ত মুঠোফোন নির্ভরতা কমিয়ে ফেলতে পরামর্শ দেন গবেষকেরা।
ঘুমেরব্যাঘাত: মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অতিরিক্ত সময় বার্তা পাঠানো, চ্যাটিং করার ফলে ঘুমের মধ্যেও এর প্রভাব পড়তে পারে। হতে পারে ‘স্লিপ টেক্সটিং’ সমস্যা। এ সমস্যা হলে রাতে ঘুমের মধ্যে কাকে কী বার্তা পাঠানো হয় তা আর পরে মনে থাকে না।
বার্তা পাঠানোর বিষয়টি মাথায় থাকে বলে ঘুমের মধ্যেও হাতের কাছে থাকা মুঠোফোন থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত নম্বরে বার্তা চলে যায়। মনোবিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, দুশ্চিন্তা, কাজের চাপ আর মুঠোফোন নিয়ে অনেকের দিন কাটে। এমন অবস্থায় স্লিপ টেক্সটিং ঘটতে পারে। রাতে বিছানার পাশে মুঠোফোন না রাখার পরামর্শ দিয়েছেন গবেষকেরা।
চোখেরজ্যোতিহ্রাস: যুক্তরাজ্যের চক্ষু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে জানিয়েছেন, মুঠোফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারে দৃষ্টি বৈকল্য সৃষ্টি হতে পারে। এতে করে ক্ষীণ দৃষ্টির সমস্যা দেখা দিতে পারে। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সাধারণত চোখ থেকে ৩০ সেন্টিমিটার দূরত্ব রেখে তা ব্যবহার করেন। তবে, অনেকের ক্ষেত্রে এ দূরত্ব মাত্র ১৮ সেন্টিমিটার। সংবাদপত্র, বই বা কোনো কিছু পড়ার ক্ষেত্রে সাধারণত চোখ থেকে গড়ে ৪০ সেন্টিমিটার দূরত্ব থাকে। চোখের খুব কাছে রেখে অতিরিক্ত সময় ধরে স্মার্টফোন ব্যবহার করলে জিনগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্ষীণদৃষ্টি সৃষ্টির জন্য যা ভূমিকা রাখতে সক্ষম। গবেষকেরা একে ‘এপিজেনেটিকস সংক্রান্ত বিষয় বলেন। গবেষকেরা দীর্ঘক্ষণ ধরে স্মার্টফোনে চোখ না রাখতে পরামর্শ দিয়েছেন। দৈনিক কিছু সময় মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেন তাঁরা।
মুঠোফোন ব্যবহারের ফলে কানের সমস্যা তৈরির বিষয়টি অভ্যাসের ওপর নির্ভর করে। হেডফোন ব্যবহার করে উচ্চশব্দে গান শুনলে অন্তকর্ণের কোষগুলোর ওপর প্রভাব পড়ে এবং মস্তিষ্কে অস্বাভাবিক আচরণ করে। একসময় বধির হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
শরীরেরঅস্থি-সন্ধিগুলোরক্ষতি: অতিরিক্ত সময় ধরে মেসেজ বা বার্তা টাইপ করা হলে আঙুলের জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হতে পারে এবং অবস্থা বেশি খারাপ হলে আর্থরাইটিসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া, অনেকে অনেকেই কাজের সময় মুঠোফোন ব্যবহার করতে গিয়ে কাঁধ ও কানের মাঝে ফোন রেখে কথা বলেন। অনেকেই অতিরিক্ত ঝুঁকে বসে দীর্ঘ সময় ধরে বার্তা পাঠাতে থাকেন। বসার ভঙ্গির কারণেও শরীরে নানা অসুবিধা দেখা দিতে পারে। চিকিত্সকের পরামর্শ হচ্ছে অতিরিক্ত সময় ধরে মুঠোফোনে বার্তা লিখবেন না, এতে করে শরীরের জয়েন্ট বা সন্ধির সমস্যা থেকে সুস্থ থাকতে পারবেন।
জীবাণুরঅভয়ারণ্য: মার্কিন গবেষকেরা পরীক্ষা করে দেখেছেন, টয়লেট সিটের তুলনায় ১০ গুণ বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে মুঠোফোনে। মুঠোফোন নিয়মিত পরিষ্কার না করায় এটি জীবাণুর অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে। গবেষকেরা বলেন, মুঠোফোনে ব্যাকটেরিয়াগুলো ব্যবহারকারীর জন্য খুব বেশি ক্ষতিকারক না হলেও এটি থেকে সংক্রমণ বা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। নিয়মিত মুঠোফোন পরিষ্কার করলে এ সমস্যা থেকে দূরে থাকা যায়।
শুক্রাণুকমেযেতেপারে: গবেষকেরা জানান, মুঠোফোন থেকে হাই ফ্রিকোয়েন্সির ইলেকট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নির্গত হয়। এই ক্ষতিকর তরঙ্গের সঙ্গে মস্তিষ্কে ক্যানসারের যোগসূত্র থাকতে পারে। এ ছাড়া শরীরের অন্য কোষকলা এই ক্ষতিকর তরঙ্গের প্রভাবে ক্ষতির মুখে পড়তে পারে। ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে পুরুষের প্রজননতন্ত্রেরও। গবেষকেদের দাবি, মুঠোফোন থেকে নির্গত ক্ষতিকর তরঙ্গ শুক্রাণুর ওপর প্রভাব ফেলে এবং শুক্রাণুর ঘনত্ব কমিয়ে দিতে পারে।
রিংটোনেরযন্ত্রণা: এ সমস্যা মূলত উদ্বিগ্নতা বা বিষণ্নতা থেকে ঘটতে পারে। এ ধরনের সমস্যা হলে ব্যবহারকারী ফোনের রিং না বাজলে কিংবা ভাইব্রেশন না হলেও হঠাৎ করেই তা শুনতে পান বা অনুভব করেন। অতিরিক্ত মুঠোফোন ব্যবহারের কারণে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সমস্যা ভুগতে শুরু করলে তা টেরও পান না অনেক ব্যবহারকারী।
ফেসবুকে নিরাপদ থাকবেন যেভাবে!
ফেসবুক সর্তকতা
সমগ্র পৃথিবীতে অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী রয়েছেন। এদের সংখ্যা প্রায় ১২৬ কোটি! বিপুল সংখ্যক ফেসবুক ব্যবহারকারীর মাঝে আপনিও একজন। যেহেতু ফেসবুকে প্রচুর ট্রাফিক সেহেতু এখানে একাউন্ট হ্যাক হওয়াসহ ব্যবহারকারীর নানান সমস্যা হতেই পারে।
তাই আজ আপনাদের ফেসবুকে নিজেকে নিরাপদ রাখতেই কিছু টিপস নিয়ে আয়োজন।
ফেসবুকে কিভাবে নিরাপদ থাকবেন সেটা জানার আগে চলুন একবার দেখে নিই ফেসবুকের ইতিবৃত্তঃ
বর্তমানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২৬ কোটি! এসব ব্যবহারকারী প্রতিদিন ২০০ বিলিয়ন পোস্ট আপডেট করে থাকে। এর মাঝে ছবি এবং স্ট্যাটাস এবং ব্যক্তিগত বিষয় থাকে।
ফেসবুক জানিয়েছে তাদের মোট ব্যবহারকারীর মাঝে ৭ শতাংশ ফেইক প্রোফাইল রয়েছে। ফেসবুকে প্রত্যেক ব্যবহারকারীর গড় বন্ধু সংখ্যা হচ্ছে ২৫০ জন।
এছাড়া প্রতিদিন ফেসবুক ব্যবহারকারীদের মাঝে ১০১ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারী তাদের মোবাইল ডিভাইস দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করেন। ১২৮ মিলিয়ন ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রতিদিন তাদের কম্পিউটার ডিভাইস দিয়ে ফেসবুক ব্যবহার করে থাকেন।
এবার চলুন জেনে নিই ফেসবুকে নিজের ব্যক্তিগত বিষয় শেয়ার করার বিষয়ে, ফেসবুকে টিনএজ ব্যবহারকারীদের ৫৫ শতাংশ তাদের ব্যক্তিগত বিষয়ে অপরিচিতদের সাথে শেয়ার করেন, ৬৭ শতাংশ টিনএজ ব্যবহারকারী জানেন তারা কিভাবে তাদের ফেসবুকে পরিচয় গোপন করবেন নিজেদের বাবা মার কাছ থেকে। ৩৪ শতাংশ বাবা মা তাদের সন্তানদের ফেসবুক ব্যবহারে কড়াকড়ি জারি করেন।
ফেসবুকে প্রতি ৪ জনের ১ জন কোন না কোন প্রতারণার শিকার হয়। এছাড়া প্রতি ৩৬ জনের একজন নিজেদের তথ্য এবং ছবি ফেসবুকে শেয়ারের কারণে চোরের দ্বারা কিছু না কিছু চুরির শিকার হয়েছেন।
এবার চলুন জেনে নেই ফেসবুকে নিরাপদ থাকতে আপনাকে যা যা করতে হবে:
- কখনোই klout.com কিংবা এর মত কোন সার্ভিস ফেসবুক লগ ইন করে ব্যবহার করবেন না। কারণ সেখানে আপনার নিরাপত্তা বিগ্নিত হতে পারে, সুতরাং যেখানে নিরাপত্তা নেই সেখানে ব্যবহার অপ্রয়োজনীয়।
- কখনোই পাবলিক ভাবে অপ্রয়জনে লোকেশন শেয়ার করবেন না, এতে চোর কিংবা অন্য কারোর অনুসরণে নিজের অজান্তেই পড়ে যেতে পারেন।
- কখনোই নিজের ইমোশনাল বিষয় সমূহ পাবলিক ভাবে শেয়ার করবেন না এতে অনেকেই আপনার সরলতার সুযোগ নিয়ে আপনাকে ব্ল্যাক মেইল করতে পারে।
- কখনোই আপনার পারিবারিক ঠিকানা সম্পূর্ণ ফেসবুকে দিয়ে দিবেন না, কিংবা আপনার সকল মোবাইল নাম্বার এতে নানান সমস্যায় পড়তে পারেন।
- ফেসবুক মোবাইল অ্যাপ ব্যবহারে সচেতন হউন কারণ এর মাধ্যমে আপনার একাউন্ট হ্যাক হতে পারে।
- ব্যক্তিগত ছবি পাবলিক ভাবে শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন।
- কখনোই অপরিচিত দের থেকে পাঠানো বন্ধু রিকোয়েস্ট হুট হাট না দেখেই গ্রহণ করবেন না। এটি আপনার সমস্যার কারণ হতে পারে।
- সব সময় ক্ষুদ্র কিংবা সহজ পাস ওয়ার্ড ব্যবহার থেকে অবশ্যই বিরত থাকবেন এবং আপনার পাস ওয়ার্ড অবশ্যই বড় এবং সংখ্যা ও শব্দের মিশেলে দিবেন।
সূত্রঃ দি ঢাকা টাইমস